Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
একজন সফল ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তার গল্প
ছবি
ডাউনলোড

একজন সফল ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তার গল্প


আরজাহান আলী একজন কলেজ শিক্ষক। করোনাকালে যখন কলেজ বন্ধ তখন বাড়িতে বসে কি করা যায় ভাবতে লাগলেন আরজাহান আলী। ইউটিউব ঘাটতে ঘাটতে তিনি পেয়ে গেলেন কেঁচো সার তৈরীর একটি ভিডিও। তিনি দেখে অনুপ্রাণিত হলাম হলেন। যোগাযোগ করলেন তার ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব জাহিদ হাসান হিরকের সাথে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা  তাকে পরামর্শ দিলেন কিভাবে ভার্মি কম্পোস্ট

উৎপাদন করতে হয়। আর জাহান আলীর তীব্র আগ্রহের কথা শুনে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিতা সরকার তাকে 'উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রকল্প' এর আওতায় একটি প্রদর্শনী প্রদান করলেন। আরজাহান আলী দোচালা ঘরে 15 টি পাকা চেম্বার করলেন এবং গ্যাস মুক্ত গোবর দিয়ে চেম্বার গুলো ধরে ফেললেন। তিনি রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে ভার্মি কম্পোস্ট সারের জন্য উপযুক্ত  আফ্রিকান লাল কেঁচো(Red Wigeler, Esenia fetida) নিয়ে আসলেন এবং সেগুলো চেম্বারে ছেড়ে দিলেন। 40 দিন পরে তিনি প্রথম ভার্মি কম্পোস্ট সার উত্তোলন করলেন এবং নিজের জমিতে প্রয়োগ করে অভূত সাফল্য পেলেন। প্রথমদিকে তিনি চিন্তিত ছিলেন এই ভার্মি কম্পোস্ট সার গুলো কোথায় বিক্রি করবেন। কিন্তু এখন আর তার চিন্তা নেই।তার সারের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।  বাড়িতে লোকজন এসে ভার্মি কম্পোস্ট সার কিনে নিয়ে যায়।  তিনি 10 থেকে 12 টাকা কেজি দরে এই সার গুলো বিক্রি করেন। প্রতি মাসে তিনি এক থেকে দেড় টন সার উৎপাদন করেন এবং 12 থেকে 15 হাজার টাকা অনায়াসে লাভ করেন।  প্রচুর অর্ডার আসে কিন্তু তিনি চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেজন্য ভার্মি কম্পোস্ট এর চেম্বার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।


চাকরির পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে আরজাহান আলী অনেক খুশি।

ঈশ্বরদীতে কেঁচো সার তৈরীর এরকম অনেকগুলো হাব আছে। প্রতিমাসে প্রায় ১০ টন কেঁচো সার উৎপাদন হয়।



ভার্মি কম্পোস্ট সারের উপকারিতা:

১. যেকোনো জৈব সারের থেকে ভার্মি কম্পোস্ট পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। ভার্মিকম্পোস্ট সারে গাছের অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্য উপাদানের ১০টিই বিদ্যমান। গবেষণায় দেখা গেছে, আদর্শ ভার্মিকম্পোস্টে জৈব পদার্থ ২৮.৩২ ভাগ, নাইট্রোজেন ১.৫৭ ভাগ, ফসফরাস ১.২৬ ভাগ, পটাসিয়াম ২.৬০ ভাগ, ক্যালসিয়াম ২ ভাগ, ম্যাগনেসিয়াম ০.৬৬ ভাগ, সালফার ০.৭৪ ভাগ, বোরন ০.০৬ ভাগ, আয়রন ৯৭৫ পিপিএম, ম্যাঙ্গানিজ ৭১২ পিপিএম, জিঙ্ক ৪০০ পিপিএম এবং কপার ২০ পিপিএম রয়েছে।

২. মাটিকে বায়ু প্রবেশের উপযোগী করে তোলে।

৩. মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়।

৪. গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৫. রাসায়নিক সার কে ভেঙ্গে গাছের জন্য গ্রহণ উপযোগী করে।

৬. মাটির বিষাক্ততা কমায়।

৭. মাটির জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক এর নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি করে।

৮.  সবজি ও ফলের স্বাদ বৃদ্ধি করে।

৯. পোকামাকড়ের আক্রমণ কমায়।

১০. রাসায়নিক সার পরিমাণে কম লাগে।

১১. কেঁচো বারবার কিনতে হয় না একবার কিনলেই সেখান থেকে কেঁচোর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।